ক্রীড়া প্রতিবেদক
৫৩ রানে কিউইদের প্রথম ৩ উইকেট নেই । সরাসরি থ্রোয়ে চতুর্থ উইকেট তুলে নেন তামিম। জয়ের পাল্লা হেলতে শুরু করে টাইগারদের দিকে। কিন্তু এরপর ফিল্ডারদের ক্যাচ ছাড়ার মহড়া। ৩৬ থেকে ৩৮ ওভারে বাংলাদেশ অন্তত ৫টি ক্যাচ ছাড়ে। তাসকিনের বলে মুশফিক, তাসকিনের বলে মিঠুন, মেহেদি হাসান নিজের বলে নিজেই (দুবার), তাসকিনের বলে মেহেদি। এই সময় মনে হচ্ছিল খেলা নয় যেন ক্যাচ মিসের মহড়া হচ্ছিল। অন্যদিকে জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করে কিউইদের এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জেতান অধিনায়ক টম ল্যাথাম। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ৫ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৭১ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৫ উইকেট ও ৫ বল হাতে হাতে জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের দেয়া ২৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই মোস্তাফিজুর রহমান তুনে নেন কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিলের উইকেট। তার আগে ২৪ বল খরচ করে তিনি ব্যক্তিগতভাবে সংগ্রহ করেন ২০ রান ।
এরপর নবম ওভারে হ্যানরি নিকোলসকে সরাসরি বোল্ড করেন বাংলাদেশ দলের উদীয়মান অলরাউন্ডার মেহেদি শেখ। পরের একই কায়দায় তিনি সাজঘরে পাঠান উইল ইয়াংকে মাত্র ১ রানে।
এরপর বোলাররা যখন জুটি ভাঙতে ব্যর্থ, তখন ফিল্ডিংয়ে জাদু দেখান অধিনায়ক তামিম। তার সরাসরি থ্রোয়েই ৩৩.৪ ওভারে দলীয় ১৬৬ রানে কনওয়েকে (৭২) রান আউট করেন তামিম ।
কিন্তু তার আগে স্বাগতিকরা ডেভন কনওয়ে ও টম লাথাম মিলে তুলে নেন ১১৩ রান। ম্যাচ ঝুঁকতে শুরু করে কিউইদের দিকে।
এরপরও সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। তাসকিনের করা ইনিংসের ৩৬তম ওভারের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ রাখতে পারেননি মুশফিক। একই ওভারে শর্ট মিডঅফে দাঁড়িয়ে হাঁফ চান্সকে ধরতে ব্যর্থ হন মোহাম্মদ মিঠুন। পরের ওভারে টম লাথাম ফিরতি ক্যাচ দেন শেখ মেহেদির হাতে। কিন্তু সহজ সেই সুযোগ হাতে রাখতে পারেননি মেহেদি। ফলে জীবন পেয়ে এ দুজনই মূলত ম্যাচ শেষ করার কাজটা ভালোভাবে সম্পন্ন করেন।
৪৫.৩ ওভারে জিমি নিশামকে যখন ৩০ রানে ফেরান মোস্তাফিজ তখন বাংলাদেশ সিরিজ হারার ম্যাচ থেকে ২৭ দূরে। এরপর ডার্লি মিচেলকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন লাথাম। তিনি ১১০ রানে অপরাজিত থাকেন। মিচেল অপরাজিত থাকেন ১৫ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন মেহেদি শেখ এবং মোস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে টস হেরে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই ম্যাট হ্যানরি বলে লিটন কুমার দাসকে হারান। এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে তামিম দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তোলেন ৮১ রান। বিশতম ওভারের শেষ বলে মিচেল সান্টনারের বলে ব্যক্তিগত ৩২ রানে আউট হন সৌম্য।
সৌম্য ফিরে গেলে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে তামিম গড়ে তোলেন ৪৮ রানের জুটি । পূর্ণ করেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫০তম ফিফটি। ৩২.২ ওভারে দলীয় ১৩৩ রানের মাথায় নিজের ভুলে রান আউট হন তামিম। যাওয়ার আগে খেলেন ৭৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস।
মিঠুনের সাথে ভাল জুটি গড়ার আভাস দিয়ে ৪০.৩ ওভারে দলীয় ১৮৩ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মুশফিকও। যাওয়ার আগে ৫১ রানের পার্টনারশিপের মধ্যে ৫৯ বলে ৩৪ রান করেন তিনি। এরপর নড়েচড়ে বসেন মিঠুন। ৫৭ বলে ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলের সংগ্রহ নিয়ে গেছেন ৬ উইকেটে ২৭১ রানে। এসময় তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (১৬), শেখ মেহেদি হাসান (৭) এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (৭ )। কিউদের পক্ষে স্যান্টনার দুইটি এবং জেমিসন, হেনরি ও বোল্ট প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নেন।