নিজস্ব প্রতিবেদক :
চীনা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হুয়ালং ইয়ান (৫ জুন) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক পোস্টে এ কথা জানান।
তিনি তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, এখন পর্যন্ত টিকা বিষয়ে সিনোফার্মের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনও চুক্তি হয়নি। দ্বিতীয়ত, এটি চীনা সরকার নয়, বরং এটি সিনোফার্ম এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি ব্যবসায়িক চুক্তি।
গত ২৭ মে মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চীন থেকে সিনোফার্মের করোনা টিকার দেড় কোটি ডোজ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন হয়। সরকার এ টিকার প্রতি ডোজ ১০ ডলারে কিনতে যাচ্ছে বলে বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান।
পরে এ দাম জানানো নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। বলা হয়, টিকা নেয়ার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে এর দাম প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (৪ জুন) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা চীনা রাষ্ট্রদূতের কাছে এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তবে এ ঘটনায় আমাদের অবস্থান খানিকটা খারাপ হয়েছে। ভবিষ্যতে সরকার আর ওই দামে টিকা কিনতে পারবে না।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতা ও কূটনৈতিক ব্যর্থতায় টিকা আমদানিতে বারবার হোঁচট খাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ-চীনের টিকা কূটনীতির প্রক্রিয়ার মাঝেই বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং দাবি করেন, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে না পারা ও সময়ক্ষেপণের কারণে টিকা কিনতে দেরি হয়েছে বাংলাদেশের।
এরপরে টিকা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় আলোচনায় আসে অপ্রকাশযোগ্য চুক্তি। যার জন্য চীনা ভাষায় লেখার জায়গায় সই করে ফেলা এক ধরনের চাহিদাপত্র দিয়ে পরে তা কমানোসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রশাসনিক নানা দুর্বলতার কথাও উঠে আসে জনসম্মুখে।
অপ্রকাশযোগ্য চুক্তি শর্ত লঙ্ঘন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আক্তার জানিয়ে দেন ডোজপ্রতি ১০ মার্কিন ডলারে বাংলাদেশকে দেড় কোটি করোনা টিকা দেওয়ার চুক্তি করেছে সিনোফার্ম।
দ্বিতীয় দফায় বাংলাদশেকে আরও ছয় লাখ টিকা উপহার দিচ্ছে চীন। আগামী ১৩ জুন উপহারের এ টিকা ঢাকায় পৌঁছবে। এর আগে গত ১২ মে চীন বাংলাদেশকে সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার দেয়।
এতে চীনের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয় ক্ষোভ। পরে চীনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে হয় বাংলাদেশকে।