কিন্তু ব্যক্তিগত সততা ও সাহসকে সম্মান করা, আর তাঁর সৃষ্টিকর্মকে তথা সাহিত্যকে সম্মান করা আলাদা জিনিস। সাহিত্যকে সম্মান করা বলতে বোঝাতে চাইছি তাঁর সাহিত্যকে মূল্যায়ন করা। কিন্তু দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, তাঁর সাহিত্যের সত্যিকার মূল্যায়ন এখনো হয়নি। অর্থাৎ যতটুকু মূল্যায়ন হওয়া উচিত ছিলো, ততটুকু হয়নি।
এই মূল্যায়ন না হওয়ার অনেকগুলো কারণের একটি এই যে, সামাজিক ক্ষেত্রের মতো সাহিত্য ক্ষেত্রেও এখনো এখনে উপনিবেশের ভূত রয়ে গেছে। এখানে সাহিত্য বিচার করা হয় ইউরোপীয় মানদণ্ডকে মাথায় রেখে। প্রাচ্যেরও যে একটা মানদণ্ড আছে, বিচারের ক্ষেত্রে সেটা কেউ মনে রাখেনা কিংবা মানেনা। ইউরোপ তথা পশ্চিমা পৃথিবী সাহিত্য বিচারের ক্ষেত্রে সবসময় একচোখা। অনেকটা একচোখা দৈত্যের মতো। তারা মডার্নিটি দেখে, মরালিটি দেখেনা। ফলে ‘মানদন্ড’-এর ‘মান’ আর থাকেনা, ‘দন্ড’-টাই কেবল থেকে যায় বিচারহীনতার সাক্ষী হিসেবে। যে যা-ই বলুক, বিচারে যদি ভারসাম্য না থাকে, মরালিটিকে বাদ দিয়ে মডার্নিটিকে প্রাধান্য প্রদান করা হয়, তখন তা আর বিচার থাকেনা, হয়ে যায় বিকার ও বেকার।
লেখক- মুহাম্মদ নিযামুদ্দীন, কবি ও প্রাবন্ধিক।