ভ্রমণে কারও ভালো লাগে সমুদ্রতীরে দাঁড়িয়ে নিজেকে নতুন করে জানতে,কারও ভালো লাগে সবুজে মোড়া অরণ্যেঘেরা পাহাড়, কারওবা ভালো লাগে ঝর্নায় কান পেতে জলের কল্লোল শুনতে শুনতে তাপিত দেহটাকে ভেজাতে।
ভালো লাগার এ সবটুই পাবেন চট্টগ্রামের পাহাড়ঘেরা সবুজে মোড়া জনপদ সীতাকুণ্ডে। সবুজের গহীন অরণ্য, উচঁ-নিচু পাহাড়, বন্যপ্রাণী আর ঝর্নার ঠাণ্ডা স্বচ্ছ জল অপেক্ষা করে আছে আপনার মন ভালো করে দিতে।
সারা সপ্তাহের কাজের একঘেঁয়েমি দূর করতে এ ছুটির দিনটিতেই বেরিয়ে পড়ুন সীতাকুণ্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্কে উদ্দেশ্যে। পাহাড়ের চূড়ায় বসে দর্শন পাবেন দূর সমুদ্রের। যা মন ভালো করে দেবে নিমেষেই।
বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান ঐতিহাসিক চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে দেশের প্রথম এবং এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম এ ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনটির অবস্থান। জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য এবং পর্যটকদের বিনোদনের জন্য বন বিভাগের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা পার্কটিতে রয়েছে বিরল প্রজাতির গাছপালা, হাজারো রকমের নজকাড়া ফুলের গাছ, কৃত্রিম লেক ও বিরল প্রজাতির পাখি। রয়েছে সুপ্তধারা ও সহস্র্রধারা ঝর্নাসহ ঝিরিপথের ছোট-বড় বেশ কয়েকটি ঝর্না। তার পরেই রয়েছে পিকনিক স্পট, বিশ্রামের ছাউনি। পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে হাঁটতে হাঁটতে দেখা পেয়ে যেতে পারেন বন্যপ্রাণীর। পার্কটিতে রয়েছে মায়াহরিণ, বানর, হনুমান, শূকর, সজারু, মেছোবাঘ, ভালুক ও বনমোরগ। শীতকালে গেলে দেখা পেয়ে যেতে পারেন দাড়াঁশ, গোখরা, লাউডগাসহ নানা প্রজাতির সাপ ও জলজ প্রাণীর।
সেখানে নির্দেশিত পথ ধরে হাঁটলেই চোখে পড়বে ‘সুপ্তধারা ঘুমিয়ে পড়ি জেগে উঠি বরষায়’। এরপর পাহাড়ি ট্রেইল পেরিয়ে দেখা পাবেন অনিন্দ্যসুন্দর ঝর্না ‘সুপ্তধারা’র। এক কিলোমিটার পথে পাবেন পিকনিক স্পট, ওয়াচ টাওয়ার, হিম চত্বরসহ বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। সেখানে সেট করা চেয়ারে বসে দেখে নিতে পারেন দূর সমুদ্রের রূপ।
সহস্র্রধারা ঝর্ণা দেখে এসে বোটানিকাল গার্ডেনের উত্তরে গেলে চোখে পড়বে পাহাড় আর পাহাড়। এ যেন পাহাড়ের স্র্রোত। একটু বেশি সময় হাতে নিয়ে বের হলে সময় কাটাতে পারেন কৃত্রিম লেকে। সহস্র্র ধারা ও সুপ্তধারা ঝর্না থেকে বহমান জলকে কৃত্রিম বাঁধ তৈরির মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে। তাতেই ব্যয় করতে পারেন কিছু সময়।এ পার্কটির মূল আকর্ষণ চন্দ্রনাথ মন্দির।
চন্দ্রনাথ মন্দির দেখে ফেরার পথে রয়েছে গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত। এ সৈকতটি অন্য সব সৈকত থেকে পুরোপুরি আলাদা। বিচ সম্পর্কিত ধারণা ভেঙ্গে দেবে এর সৌন্দর্য। মাটির গঠন। এখানে বিস্তৃত সমভূমি নয়, বরং মাটির মাঝ দিয়ে খালের মতো এঁকেবেঁকে ঢুকে গেছে সমুদ্র। । সবুজ ঘাসের ফাঁকে স্রোতের জল ঢুকে পড়া বিচটি মুগ্ধ করবে সবাইকে।