সরকারি চাকরিজীবীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়ন করছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে সরকার। রোববার কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্কারণ) অনুসরণ করার জন্য ২০২০ সালের ৭ মে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পরিপত্র যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা- তা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা এবং কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী নির্দেশনা অমান্য করলে তা পর্যালোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে এই কমিটি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (প্রশাসন অধিশাখা) মো. আবুল হাছনাত হুমায়ুন কবীরকে সভাপতি করে এই কমিটি গঠন করা হয়।
পাঁচ সদস্যের এই কমিটির সভাপতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (প্রশাসন অধিশাখা) মো. আবুল হাছনাত হুমায়ুন কবীর।
কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিধি-৪ শাখা) কাজী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, উপসচিব (অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ-৩ শাখা) এ এস এম মুস্তাফিজুর রহমান, উপসচিব (সিপি-১ শাখা) খালিদ মেহেদী হাসান। সিনিয়র সহকারী সচিব (পরিবহন শাখা) মো. আব্দুস সালাম চৌধুরীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ) অনুসরণ করার জন্য ২০২০ সালের ৭ মে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেই নির্দেশনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করছে কিনা- তা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী নির্দেশনা অমান্য করলে তা পর্যালোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে এই কমিটি।
যা ছিল ওই পরিপত্রে
গত বছরের ৭ মে জারি করা পরিপত্রে বলা হয়েছে, নির্দেশিকায় (সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাফতরিক এবং ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট তৈরি করা এবং এতে পরিহারযোগ্য বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। এরূপ নির্দেশনার আলোকে সরকারের সকল মন্ত্রণালয় বিভাগ এবং এর আওতাধীন অধিদফতর/পরিদফতর/সংস্থার কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও কতগুলো বিষয় অনুসরণ করার জন্য পরিপত্রে অনুরোধ জানায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুর্ণ হয় এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো রকম তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির পরিপন্থী কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে বলে পরিপত্রে উল্লেথ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস/পেশাকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো পোস্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। লিঙ্গ বৈষম্য বা এ সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না।
জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বিষয়ে লেখা, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা যাবে না। ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনো ‘কন্টেন্ট’ বা ‘ফ্রেন্ড’ সিলেকশনে সকলকে সর্তকতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টে ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং সেজন্য প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।