মঈন উদ্দিন :
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম এক কোভিড পজেটিভ গর্ভবতীর জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছে । মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সাথে একটি ভার্চুয়াল প্রেস মিটিং-এ তাদের সাফল্যের গল্প তুলে ধরা হয়। রোগী তার ডেলিভারির ৪ দিন আগে কোভিড আক্রান্ত হন এবং তার পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রামের একাধিক হাসপাতালে যোগাযোগ করেছিলেন। তবে রোগী কোভিড পজেটিভ এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমার মতো শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তাই অন্যান্য হাসপাতাল রোগীকে ফিরিয়ে দেয়।
অবশেষে, ১ জুলাই ৩০ বছর বয়সী মিসেস ফারজানা আক্তার, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এ ভর্তি হন। ভর্তির সময় রোগীর শ্বাসকষ্ট এবং ভর্তির ১০ দিন আগ থেকে জ্বরাক্রান্ত থাকার কারণে তাকে তৎক্ষণাৎ মিনিটে ১৫ লিটার বেগে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয় এবং তাকে হসপিটালের ডেডিকেটেড অ্যান্ড সেগ্রিগেটেড কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। রোগী এভারকেয়ারের অবসটেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকোলজি এর কনসালটেন্ট ডা. ফারজানা হাসীন মুক্তি’র তত্ত্বাবধানে ছিলেন। আর রোগীর কোভিড চিকিৎসার জন্যে যৌথভাবে দায়িত্বরত ছিলেন ডা. রেজাউল করিম (ইন্টারনাল মেডিসিন) এবং ডা. মোঃ ফজলে কিবরিয়া চৌধুরী (রেসপাইরেটরি মেডিসিন)।
কোভিড আক্রান্ত রোগীদের জন্য এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামে একটি পৃথক অপারেশন থিয়েটার রয়েছে বলেও জানানো হয় উক্ত ভার্চুয়াল সভায় যেখানে নিয়োজিত আছে পৃথক ওটি টিম এবং স্টাফ। এছাড়া আক্রান্তদের স্থানান্তরের জন্য আলাদা লিফটেরও সুব্যবস্থা আছে। রোগীর স্কার পেইন থাকার কারণে তাকে জরুরীভিত্তিতে সিজার করা হয় এবং এই দক্ষ কাজ সম্পন্ন করেন অবসটেট্রিক্স অ্যান্ড গাইনোকোলজি এর কনসালটেন্ট ডা. ফারজানা হাসীন মুক্তি।
নিওনেটোলজিস্ট ডা. দীপিকা দে-এর তত্ত্বাবধায়নে, ১লা জুলাই সন্ধ্যা ৬ টা ১০ মিনিটে একটি মেয়ে শিশুর ডেলিভারি সম্পন্ন হয়, যার ওজন ছিল ২.৭০ কে.জি.। জন্মের পরপরই বাচ্চাটি কেঁদে উঠে যার ফলে কোন বাড়তি জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়নি। এছাড়া আরটি-পিসিআর সম্পন্ন করা হয় যার ফলাফল নেগেটিভ আসে। মায়ের শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় প্রাথমিকভাবে শিশুটিকে ফর্মূলা দুধ খাওয়ানো হয়। শিশুটি বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ আছে এবং গতকাল থেকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া শুরু করেছে। মা-এর অবস্থাও আগের চেয়ে অনেকাংশেই ভালো, এমনকি কোন অক্সিজেনেরও প্রয়োজন হচ্ছে না।
শিশুটির চাচা জানান, “আমার ভাবীর কোভিড পজিটিভ অবস্থায় আমরা ৪ টি হসপিটালে যোগাযোগ করেছিলাম কিন্তু কেউই ঝুঁকি নিতে চায়নি। কিন্তু এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এ আসার পর হসপিটালের ডাক্তার, নার্স এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মীরা দ্রুতই আমাদের জরুরি সেবা প্রদান করেন, এমনকি সি-সেকশন প্রক্রিয়া শুরু করে। আমাদের এই প্রয়োজনের সময় পাশে থেকে সাহায্য করায় এবং সেরা সেবা প্রদানের জন্য এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”