কলম্বিয়ান ডিফেন্ডারের কড়া ট্যাকলে রক্তপাত ঘটে মেসির বাঁ পায়ে। মোজা বেয়ে চুয়ে পড়ে রক্ত। মেসি তবু মাঠ ছাড়েননি।
কলম্বিয়ান ডিফেন্ডারের কড়া ট্যাকলে রক্তপাত ঘটে মেসির বাঁ পায়ে। মোজা বেয়ে চুয়ে পড়ে রক্ত। মেসি তবু মাঠ ছাড়েননি।ছবি: রয়টার্স
কতবার যে লিওনেল মেসির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে, তা ভালোই জানা আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। ক্লাব ফুটবলে মেসির সাফল্য যেখানে আকাশছোঁয়া, দেশের হয়ে ততটাই ম্লান।
একটা বিশ্বকাপ মাথার ওপর তুলে ধরে অবসরে যাবেন, এই ছবিটা যেমন বিশ্বের সব মেসিভক্ত দেখতে চান, এটা আজন্মলালিত স্বপ্ন মেসিরও। অথচ বিশ্বকাপ দূরে থাক, একটা কোপাও জিততে পারেনি মেসির আর্জেন্টিনা। তীরে এসে তরি ডুবেছে বারবার।
মেসির ক্যারিয়ারে শুধু কোপা আমেরিকাতেই তিনবার ফাইনাল খেলেছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু একবারও স্বপ্নের মতো শেষ হয়নি কোনো টুর্নামেন্ট।
তবে সেই হতাশা এবার ঝেড়ে ফেলতে চান মেসি। আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকরের যে বাঁ পায়ে অজস্র কাব্য ঝরেছে, সেই পা আজ হয়েছিল রক্তাক্ত।
কিন্তু সেদিকে এতটুকু খেয়াল ছিল না মেসির। শুধু একটাই লক্ষ্য ছিল, যেভাবেই হোক, কলম্বিয়ার বিপক্ষে জিততে হবে। তাই তো চোট পেয়েও মাঠ ছেড়ে উঠে যাননি।
ঘটনাটা ম্যাচের ৫৭ মিনিটে। কলম্বিয়ান লেফট ব্যাক ফ্রাঙ্ক ফাবরার কড়া ট্যাকলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মেসি। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা মেসির এই চোট দেখেও ভেনেজুয়েলার রেফারি জেসুস ভালেনজুয়েলা ফাউলের বাঁশি বাজাননি!
কলম্বিয়ান লেফটব্যাক ফ্রাঙ্ক ফাবরা মেসিকে কড়া ট্যাকলে রক্তাক্ত করে পরে ক্ষমাও চান।ছবি: রয়টার্স
মেসি যখন মাঠে শুয়ে ছিলেন, শুধু কয়েক মিনিটের জন্য খেলা থামিয়েছিলেন তিনি। এরপর আর্জেন্টিনা দলের চিকিৎসক এসে মেসির পায়ে ব্যথানাশক ওষুধ ছিটিয়ে দেন। রক্ত বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তারপরও চুয়ে চুয়ে বেয়ে পড়ে রক্তে মোজা লাল হয়ে গিয়েছিল।
পরে অবশ্য ফাবরা মেসির কাছে এসে ক্ষমা চান। ম্যাচ শেষে মেসির জার্সিটাও নিতে চেয়েছিলেন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার। এই ম্যাচে অবশ্য কলম্বিয়ানরা ছয়বার হলুদ কার্ড দেখেছেন। সব কটি কার্ডই দেখতে হয়েছে মেসিকে ফাউল করার জন্য।
মেসির এই রক্তমাখা ছবি মনে করিয়ে দেয় আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ম্যারাডোনার দলের প্রতি এমন অসাধারণ নিবেদন। ১৯৯০ ইতালি বিশ্বকাপে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে ঠিক এভাবেই চোট পেয়েছিলেন ম্যারাডোনা। রক্তমাখা পা নিয়েও শেষ পর্যন্ত খেলেছিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
১১ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল ছয়টায় মারাকানায় ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।