দেশে করোনা সংক্রমণের কারণে স্থগিত করে রাখা প্রথম ধাপের দ্বিতীয় কিস্তির ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার ভোট চলাকালে কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্রে গোলাগুলির ঘটনায় আবুল কালাম নামে একজন নিহত হন। এ সময় আরও চারজন গুলিবিদ্ধ হন। সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কুতুবজোমের একটি ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের পিলটকাটা কেন্দ্রে সংঘর্ষে আব্দুল হালিম নামে একজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থী শেখ কামাল এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোশাররফ হোসেন খোকনের সমর্থকদের মধ্যে ভোট জালিয়তি নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই আবুল কালাম (৪০) নিহত হন। সংঘর্ষের কারণে দুই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
নির্বাচনী সংঘর্ষে বৃদ্ধার মৃত্যু
ওদিকে, বাগেরহাটের মোংলায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ফাতেমা বেগম (৭০) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ৩ জন। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপাই গ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বী ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান মোড়ল ও শফিকুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন – ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মতিয়ার মোড়ল (৬০), বোরহান শেখ (৩৫) ও ইস্রাফিল (২৬)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত ৯টার দিকে চাঁদপাই মোড়ে ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ও প্রার্থী মতিয়ার রহমান মোড়ল এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শফিকুল ইসলামের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন তারা। এ সময় বিরোধ ঠেকাতে এসে মতিয়ার রহমানের সম্পর্কে ফুপু ফাতেমা বেগম আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক। তবে প্রতিপক্ষ বলছে কোনো আঘাতে নয় স্ট্রোক করে মারা গেছেন ঐ বৃদ্ধা ।
ভোট বর্জন করেছেন নৌকামার্কার দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী
আজ সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই নোয়াখালীর হাতিয়া কেন্দ্র দখল, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন নৌকামার্কার দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। এরা হলেন হাতিয়ার ৯ নম্বর বুড়িরচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) জিয়া আলী মোবারক কল্লোল, ১০ নম্বর জাহাজ মারা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) এটিএম সিরাজ উল্যাহ
এছাড়া ৫ নম্বর চরঈশ্বর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল হালিম আজাদ (আনারস প্রতীক), ৮ নম্বর সোনাদিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী (মোটরসাইকেল প্রতীক) নূরুল ইসলাম, ১১ নম্বর নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী (মোটরসাইকেল প্রতীক) মো. মেহেরাজ উদ্দিনও একই অভিযোগ এনে ভোট শুরুর পরপরই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এর মধ্য দিয়ে হাতিয়ার সাত ইউনিয়ন নির্বাচনের পাঁচটিতেই চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোট বর্জন করলেন।
ওদিকে, ফেনীর সোনাগাজীতে পৌর নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর এক সমর্থকসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।