ধূমকেতু লিওনার্ড প্রায় ৩৫,০০০ বছর পর ফিরে এসেছে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি। লিওনার্ড ৩৫,০০০ বছর পর পর পৃথিবীর সান্নিধ্যে আসে। যেমন গতকাল, ১২ ডিসেম্বর পৃথিবীর সব থেকে কাছে চলে এসেছে। তবে এই মাসের প্রায় পুরোটাই দেখা যাবে লিওনার্ডকে। তাকে দেখা যাবে রাতের আকাশে সবুজাভ আভায়।
এর আবিষ্কারকরা বলছেন, এবার চলে যাওয়ার পর আর কোনো দিন ফিরে আসবে না। আমাদের সৌরজগতেরই অংশ এই ধূমকেতুটি বহু দূর থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। সূর্য থেকে এর সব থেকে বেশি দূরত্ব ৩৭০০ এইউ হয়ে দাঁড়ায়। ১ এইউ হলো সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব। একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে এই ধূমকেতুর সময় লাগে ৮০,০০০ বছর। তবে এই কক্ষপথ এবার বদলে যাচ্ছে। আর এই সৌরজগতের বাসিন্দা থাকছে না লিওনার্ড। সে পাড়ি দিচ্ছে আরও দূরে। সূর্যের পাশ দিয়ে যাওয়ার পর সে এই সৌরজগতের বন্ধন থেকে নিষ্কৃতি পাবে। চলে যাবে মহাশূন্যের গভীরে, অনেক আলোকবর্ষ দূরে অন্য কোনো সৌরজগতের উদ্দেশে। আর কোনো দিনও এই সৌরজগতের ‘পাড়ায়’ আসবে না সে। এজন্যই লিওনার্ডকে বলা হচ্ছে ‘ওয়ান্স ইন এ লাইফটাইম’ ধূমকেতু।
প্রসঙ্গত, এই ধূমকেতুটি আবিষ্কারও হয়েছে খুব সম্প্রতি। এ বছরের জানুয়ারি মাসে তার খোঁজ পান গ্রেগরি জে লিওনার্ড নামে এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী। তার নামে নামাঙ্কিত হয়েছে বলাই বাহুল্য। লিওনার্ড ধূমকেতুর পোশাকি নাম সি/২০২১ এ ১।
লিওনার্ডকে দেখার সবচেয়ে ভালো সময় ভোর রাত। সূর্যোদয়ের ঘণ্টাদুয়েক আগে পূর্ব আকাশে দেখা যাবে তাকে। ঊষার ঠিক আগে আকাশের সর্বোচ্চ বিন্দুতে অবস্থান করবে। ১৪ ডিসেম্বর সূর্যাস্তের পর সন্ধ্যার আকাশেও দেখা যাবে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ১২ ডিসেম্বর পৃথিবীর সব থেকে কাছাকাছি এলেও লিওনার্ডকে সব থেকে ভালো দেখা যাবে ১৭ ডিসেম্বর।
তাছাড়া, লিওনার্ডের যা ‘চরিত্র’ তাতে তাকে খালি চোখে দেখা যাবে কি না তা নিশ্চিত নয়। দেখা যেতেও পারে, তবে দূরবিন কিংবা টেলিস্কোপ থাকলে সব থেকে ভালো।