বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে যোগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আজ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সুপ্রীম কমান্ডার, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং একই সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীতে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে যোগ দিতে প্রথম তিন দিনের সফরে ঢাকায় অবস্থানরত ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোভিন্দ সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত কুচকাওয়াজে ‘সম্মানিত অতিথি’ হিসেবে যোগ দিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন এই কুচকাওয়াজের আয়োজন ও পরিচালনা করে।

রাষ্ট্রপতি হামিদ প্যারেড কমান্ডার এবং নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল কমান্ডিং অফিসার (জিওসি) এবং সাভার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হককে সঙ্গে নিয়ে একটি খোলা জিপে চড়ে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন।

কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসার, আধাসামরিক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর অংশ নেয়। এ ছাড়াও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর মোট ১২২ সদস্য, মেক্সিকোর সেনা প্রধান সহ ৫, রাশিয়ার ৩৫, ভূটানের ৩৫,এবং যুক্তরাষ্ট্রের১জন ক্যাপ্টেনসহ ১১ সদস্য ৫১ তম বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছে।

প্যারেড গ্রাউন্ড ত্যাগ করার আগে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে কুজকাওয়াজে অংশ নেয়া কন্টিনজেন্টের কমান্ডারদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় চার নেতা ও সাত বীরশ্রেষ্টের ছবি দিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ড সাজানো হয়েছে।

এ ছাড়াও প্যারেড গ্রাউন্ডের আশপাশের সড়ক মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসের আদর্শ তুলে ধরে ব্যানার ও ফেস্টুনে সুসজ্জিত করা হয়েছে।

আমন্ত্রিত অতিথিরা সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্ট ও কন্টিনজেন্টের অস্ত্র-সম্ভার, বিমান বাহিনীর পরিচালিত দর্শনীয় ফ্লাই-পাস্ট, অপরাধ বিরোধী এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকসন ব্যাটালিয়নের হেলিকপ্টার, নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার, বাংলাদেশ ও ভারতের সেনা ও বিমান বাহিনীর ছত্রীসেনাদের প্যারাসুটে অবতরণ প্রত্যক্ষ করেন।

পরে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সুসজ্জিত মোটরগাড়ি শোভাযাত্রা প্যারেড গ্রাউন্ডে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে, মনোমুগ্ধকর বিমান মহড়া প্রদর্শিত হয়।

সমাজের সর্বস্তরের কয়েক হাজার মানুষ দুই ঘন্টার বেশি সময় ধরে চলা এই মনোমুগ্ধকর্র প্যারেড অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।

এর আগে, সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে স্ত্রী রাশিদা খানমের সাথে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ ও সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তাঁদের অভ্যর্থনা জানান।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, বিদেশী কূটনৈতিকগণ, বেশ কয়েকজন ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং বেসামরিক ও সামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

৫০ বছর আগে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

১৯৭১ সালের এই দিনে, পাকিস্তানী বাহিনীর জেনারেল এ এ কে নিয়াজী তার বাহিনীর সকল সদস্যসহ মিত্র বাহিনী ও কমান্ডিং অফিসারের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

দেশী টুওয়ন্টিফোরবিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে যোগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী
Comments (0)
Add Comment