গতকাল শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনায় ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে একথা বলেন তিনি।
জাতির পিতা সবসময় মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, উন্নত জীবন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিতেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমার লক্ষ্য এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করে একটা সুন্দর জীবন দেওয়া।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদ্বীপের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ইস্কান্ধার স্কুল অডিটোরিয়ামে, মালে চাঁদনী মাগুতে সমবেত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, বারবার আমাকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। কতবার আমাকে বন্দি করা হয়েছে। এমনকি আমাকে ক্যান্টনমেন্টে ডিজিএফআইয়ের সেলেও নিয়ে গেছে ইন্টারোগেশন করার জন্য।
তিনি বলেন, এটুকু করতে পারাই হবে আমার সার্থকতা। আর এটুকু করতে পারলেই আমি মনে করি ষড়যন্ত্রকারীরা, যে খুনিরা আমার বাবাকে হত্যা করেছে বাংলাদেশের মানুষকে পদদলিত করে রাখার জন্য, তাদের উপযুক্ত জবাব আমি দিতে পারব।
’৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায় এবং এরপর ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে জাতির পিতাকে হত্যার বিচারের পথ রহিত করায় তৎকালীন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের পদক্ষেপ এবং ১৫ আগস্টের কালরাতে বিদেশে থাকায় বেঁচে যাওয়া তাদের দুই বোনকে (শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা) দেশে ফিরতে না দেওয়ায় ছয় বছর বিদেশে রিফিউজি জীবনযাপনে বাধ্য হবার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রবাসীদের কল্যাণ করা আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বর্তমানে যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হচ্ছেন তা সমাধানে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমি একটি সফল দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছি। অনথিভুক্ত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বৈধ করার বিষয়টি সংলাপে প্রাধান্য পেয়েছে।
এখানে অকস্মাৎ এসে পড়ায় যারা এখনো বৈধতা পাননি, তাদের বিষয়ে মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের এমওইউ সইয়ের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ সরাসরি মালদ্বীপের মুদ্রায় যাতে দেশে পাঠাতে পারেন সে ব্যবস্থাও নেব, যাতে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে না হয়।
প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে এখানকার প্রবাসীরা যাতে দেশে টাকা পাঠাতে পারেন সে ব্যবস্থা সরকার করে দেবে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এখানকার বিভিন্ন দ্বীপের অভিবাসীরা যাতে নির্বিঘ্নে দেশে টাকা পাঠাতে পারেন, সেজন্য প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংককে আমি বলবো, এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাটা করে দেবে, যাতে ডলার কিনে আবার বাংলাদেশে পাঠানোয় যে লোকসান হয়, সেটা বন্ধ হয়।
দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোদের জন্য সরকার দুই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে টাকা আপনারা পাঠান, তার চেয়েও বেশি টাকা কিন্তু সরাসরি আপনার পরিবার পেয়ে থাকে।
মালদ্বীপের সঙ্গে কানেকটিভিটির উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরই আমাদের সরকার বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেয় এবং বেসরকারি খাতে বিমান পরিচালনারও সুযোগ সৃষ্টি করে, যে কারণে আজ একটি বেসরকারি খাতের বিমান মালদ্বীপে আসা শুরু করেছে। সরকারি বিমানে আমরা মালদ্বীপে যাতায়াতের একটা ব্যবস্থা করব, সে লক্ষ্য আমাদের রয়েছে।