সমুদ্র সৈকতে নারীদের জন্য আলাদা একটি সংরক্ষিত এলাকা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেছেন, ‘কক্সবাজারে আসা শুধু নারী পর্যটকদের জন্য আলাদাভাবে কার্যক্রম চলছে। নারী পর্যটক বা পর্দানশীন নারী যারা রয়েছেন, তাদের জন্য ১০০ বা ১৫০ ফিটের একটা সংরক্ষিত এলাকা করছি। যারা ইচ্ছুক হবেন বা স্বেচ্ছায় চাইবেন, তারা সেখানে গিয়ে পানিতে নামতে পারবেন। খুব তাড়াতাড়ি সেটি চালু করা হবে। সৈকতে নারীদের জন্য আলাদা ড্রেসিং রুম ও লকার রুম করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, পর্যটন এলাকা নারী-বান্ধব করার জন্য সৈকতে যারা কাজ করেন, তাদের বড় একটি অংশে নারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের মধ্যেও নারী পুলিশ রয়েছেন। হোটেল বা গেস্ট হাউজে যেন পর্যটকরা নিরাপদে থাকতে পারেন, এ ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের সাত দফা নির্দেশনা
কক্সবাজারে একজন নারীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সেখানকার নিরাপত্তায় বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজারের হোটেল মালিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে জেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়।
সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: আবু সুফিয়ান।
তিনি বলছেন, ‘এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে আমাদের যদি এক/দুই মাস সময়ও লাগে, তারপরেও এসব বাস্তবায়ন করতে পারলে পর্যটনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে বেড়াতে যাওয়া এক নারীকে অপহরণের পর একটি হোটেলে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২২ তারিখ বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঘটনার শিকার নারীকে ওই গেস্ট হাউজ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব। ওই ঘটনার পর কক্সবাজারে নারী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে এক অস্ট্রেলিয়ান তরুণী ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
তবে মো: আবু সুফিয়ান বলছেন, কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, এখানে এতটা খারাপ অবস্থা কিন্তু নয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ-সবাই সাধ্যমত চেষ্টা করছে। একটা ঘটনা (ধর্ষণের অভিযোগ) নজরে এসেছে, তাই তারা পুনরায় হোটেল মালিকদের সাথে বসে ব্যবস্থাগ্রহণ করছেন।
হোটেল-মোটেল ও পর্যটন খাতের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠকের পর যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে :
- সকল আবাসিক হোটেলে রুম বুকিং করার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন ও জমা দিতে হবে
- আবাসিক হোটেলগুলোয় একটি অভিন্ন আদর্শ কর্মপদ্ধতি প্রণয়ন করতে হবে।
- প্রতিটি হোটেলে কক্ষ সংখ্যা, মূল্য তালিকা ও খালি কক্ষের সংখ্যা, রেস্তোরাঁয় খাবারের মূল্য তালিকা প্রকাশ্যে প্রদর্শন করতে হবে।
- প্রতিটি আবাসিক হোটেলে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করতে অথবা জোরদার করতে হবে।
- শহর এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় অভিবাসীদের কক্ষ ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- হোটেল-মোটেল বা গেস্ট হাউজের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষিত হতে হবে।
- সকল হোটেল-রেস্তোরাঁর নিবন্ধন করতে হবে।