মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

করোনার মহামারির কারণে ২০২১ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় আজ শনিবার (১ জানুয়ারি) থেকে নতুন ঠিকানায় রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ২৬তম বাণিজ্য মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করেন।

এবার বাণিজ্য মেলায় ছোট-বড় মিলে ২২৫টি স্টলে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেলাটি দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের তাঁদের পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাদি এবং নতুন উদ্ভাবন সম্পর্কে ক্রেতাদের অবহিত করার সুযোগ সৃষ্টি করবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একই সঙ্গে ক্রেতারাও এ বৃহৎ আয়োজন থেকে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা পাবেন। এ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশি উদ্যোক্তারা প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁদের পণ্যের মান উন্নয়নে তৎপর হবেন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থানীয় পণ্যকে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম করার প্রয়াস পাবেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। ২০২৭ সালের পর বাংলাদেশ আর এলডিসি দেশের সুবিধা ভোগ করতে পারবে না। সেজন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ এবং পিটিএ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৮৩টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল থাকবে। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য মেলা প্রাঙ্গণ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবারের মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন রাখা হয়েছে ৬৪টি। সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৩টি, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়ন ৫৯টি এবং প্রিমিয়াম মিনি প্যাভিলিয়ন ৪২টি। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, মেলায় প্রবেশের জন্য প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছে ২০ টাকা। গতবছর পূর্ণবয়স্কদের জন্য মেলায় প্রবেশে টিকেটের মূল্য ছিল ৩০ টাকা আর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য নির্ধারিত টিকিটের হার ছিল ২০ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়েছে, মেলা প্রাঙ্গণে রেস্তোরাঁ থাকবে দুটি, স্ন্যাকস বুথ সাতটি, প্রিমিয়ার স্টল ৮৪টি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন ছয়টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন আটটি, সাধারণ স্টল ১০৭টি এবং ফুড স্টল রাখা হয়েছে ৩৫টি। পাশাপাশি বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়াম স্টল ১৭টি।

ইপিবি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে বর্তমান সরকারের চলমান মেগা প্রকল্প সন্নিবেশ করে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২০ এর মূলগেট নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থাপত্য অধিদফতরের নকশায় গণপূর্ত বিভাগ এই কাজটি করছে।

এ প্রসঙ্গে ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান (ভিসি) ফাতিমা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, মেলার সর্বশেষ প্রস্তুতি শেষ। প্রধানমন্ত্রী এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য সম্মতি দিয়েছেন।

জানা গেছে, এবছর দুটি মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্ক ও ব্যাংকের পর্যাপ্ত এটিএম বুথ থাকবে। একটি মেডিক্যাল সেন্টার থাকবে। পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী। থাকবে খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণসামগ্রী ও ফার্নিচার, রেডিমেড গার্মেন্ট পণ্য, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালী ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিকপণ্যের স্টলও থাকবে।

দেশী টুয়েন্টিফোরমাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
Comments (0)
Add Comment