বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেনি: ফখরুল

বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন তা নাকচ করে দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা লবিস্ট নিয়োগ করেছি- এটা একেবারে সঠিক না।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা যা কিছু করি দেশকে রক্ষার জন্য করি। তার মানে এই না যে, আমরা লবিস্ট নিয়োগ করেছি দেশকে রক্ষার জন্য করেছি। দ্যাট হেজ টু বি ক্লিয়ার্ড। আবারো বলছি, আমরা যা কিছু করি, দেশকে রক্ষার জন্য করি, দুর্বৃত্তদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য করি। আমরা লবিস্ট নিয়োগ করেছি- এটা একেবারে সঠিক না।’

এর আগে সকালে এক অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে দেশের ক্ষতির জন্য, পক্ষান্তরে গুড গভর্নেন্সের জন্য এবং দেশের পজিটিভ ইমেজগুলো তুলে ধরার জন্য আওয়ামী লীগ লবিস্ট নিয়োগ করেছে।’

এর আগে গত সোমবার বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচ্য বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বৈঠকে সংসদে নির্বাচন কমিশন বিল-২০২২ উত্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে যেহেতু এই সংসদ জনগণের ভোটে বৈধভাবে নির্বাচিত নয় সেহেতু এই সংসদের কোনো নৈতিক এখতিয়ার নেই এই ধরনের কোনো আইন প্রণয়নের।’

ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে গোপনীয়তার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে এই আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা আওয়ামী লীগের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে আর একটি পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার নীলনকশা মাত্র। তাছাড়া বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনও নির্বাচন কমিশনই অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সফল হবে না যদি না নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্থায়ী কমিটি মনে করে, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের একতরফা সাজানো ভোটারবিহীন ও মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপি মনে করে বর্তমান আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ, এর কোন বিকল্প নেই।

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে দুর্বার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনায়ন করতে হবে বলে মনে করে বিএনপি। সভায় বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।’

সভায় বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১২টি মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘ মিশনে র‌্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম।

বিএনপি মনে করে, ‘এর ফলে বাংলাদেশকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে। এর ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীর আয়োজনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি বাধা ও গ্রেপ্তারের অভিযোগ করে এর নিন্দা জানায় বিএনপির স্থায়ী কমিটি।

দেশী টুয়েন্টিফোরবিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেনি: ফখরুল
Comments (0)
Add Comment