গ্রামীণ জীবনযাপন বরাবরই শহর থেকে অনুন্নত এবং অপরিকল্পিত। কিন্তু এখানে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। যদি বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা থাকে, তবে গ্রামেই সম্ভব উন্নত জীবনযাপনের। গ্রামীণ জীবনকে সুন্দর ও সুবিধাজনক করার লক্ষে বাঁশখালী উপজেলার বাণীগ্রাম সাধনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলায় উপস্থাপন করে ‘স্বপ্নের গ্রাম’ নামের একটি প্রজেক্ট।
এখানে উন্নত জীবনযাপনের পাশাপাশি আয়ের উৎস তৈরির প্রক্রিয়াও করে দেখায় এ তিন ক্ষুদে বিজ্ঞানী। তিন বিজ্ঞানী হলো, ঐ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেশমা চৌধুরী, মোহাম্মদ ফকরুউদ্দিন ও সঞ্চিতা ধর। তারা জানায়, শহরের চেয়ে বেশি মানুষ গ্রামে বাস করে। তাই বলে কি এ মানুষগুলো শহরের মত সুন্দর পরিবেশ পাবে না? এমন চিন্তা থেকে আমরা ‘স্বপ্নের গ্রাম’ নামের এ প্রজেক্ট তৈরি করি। এখানে দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সবকিছু আছে। পোল্ট্রি, মাছের খামার করে আয়ের পথ তৈরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ইত্যাদি উন্নয়ন করা যায় এমন কিছু পরিকল্পনা রয়েছে এ প্রজেক্টে।
গতকাল রবিবার সকালে কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজ এবং ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪৩তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে বিজ্ঞান মেলা ও বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। দুই দিনব্যাপী এ মেলায় চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলা ও শহরসহ ৯০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১২০টি প্রকল্প প্রদর্শন করে। মেলায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের এসব আবিষ্কার নজর কাড়ছে সবার।
এছাড়া মেলা ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট উদ্ভিদ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব এমন কিছু প্রজেক্ট উপস্থাপন করে। দু’দিনের এ মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। এসময় তিনি বলেন, বিজ্ঞানে বাংলাদেশ এখনও নোবেল পুরস্কার পায়নি। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠন করতে পারলেই আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষে পৌঁছাতে পারবো। আর এটি সম্ভব হবে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান নির্ভর শিক্ষা ও গবেষণা চর্চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সাফল্যে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা একদিন আপনাদের মতো শিক্ষার্থী ছিলেন। আপনারাই আগামী দিনের বাংলাদেশ। আমরা স্বপ্ন নিয়ে বাঁচি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। আজ সেটি পূর্ণ হয়েছে। আমাদের স্বপ্ন এখন ভিশন-৪১। আর এ ভিশন যারা বাস্তবায়ন করবে তারা আপনারাই।
মেলায় এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলম। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু রায়হান দোলন। দুইদিন ব্যাপী এ মেলা দুইটি পৃথক ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একটি কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজে, অন্যটি ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রত্যেক ভেন্যুতে ৬০ জন করে মোট ১২০টি প্রকল্প প্রদর্শিত হচ্ছে।