শরীয়তপুর শহরের চরপালং এলাকায় বখাটের কোপে আহত তরুণী গত রবিবার ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহত কাকলি আক্তার (১৮) চরপালং এলাকার নুরুজ্জামান মাতবরের মেয়ে এবং শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার দাখিলের ছাত্রী ছিলেন। পরিবার তার বিয়ে ঠিক করেছিল।
গতকাল সোমবার তার বিয়ে ও এর আগের দিন তার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। গত রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এমন নৃশংস ঘটনায় পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায়, বিয়ে করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে জাহিদুল ইসলাম (২২) নামে এক তরুণ গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণীকে কুপিয়ে আহত করে। জাহিদুল শরীয়তপুর পৌরসভার কাশাভোগ এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে।
পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক ছাত্র জাহিদুল ইসলাম ওই তরুণীকে উত্ত্যক্ত করত। এমনকি পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাবও দেয়। কাকলির পরিবার জাহিদুলের কাছে বিয়ে দিতে রাজি না হয়ে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিলে ক্ষুব্ধ হয় জাহিদুল। গত বৃহস্পতিবার রাতে জাহিদুল কাকলিদের বসতঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। তার চিৎকারে এলাকার মানুষ এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতা জাহিদুলকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ দু’জনকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তাদের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতে দু’জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কাকলির অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। গত রবিবার ভোরে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
কাকলিরা দুই ভাই এক বোন। বাবা নুরুজ্জামান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই প্রবাসী। দুই ভাই শহরে একটি মোটরসাইকেলের গ্যারেজ চালান। কাকলির বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে পাকা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছিল। ধুমধামে বিয়ের আয়োজন করার জন্য চলছিল প্রস্তুতি। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ির নির্মাণাধীন ভবনের একটি কক্ষে কাকলির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত কাকলির মা ফরিদা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে যারা মেরে ফেলেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আক্তার হাসেন বলেন, তরুণীকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে হত্যাচেষ্টা মামলা করেছিলেন তার ভাই। ওই মামলায় জাহিদুলকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। আসামি জাহিদুলকে জনতা গণপিটুনি দিলে সে আহত হয়। তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।