অনলাইন ডেস্কঃ
ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেয়ার অভিযোগে রাজবাড়ীতে গ্রেফতার সোনিয়া আক্তার স্মৃতির দুই শিশু সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে ঢাকা থেকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দল স্মৃতির বাড়িতে গিয়ে তার দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন।
এ সময় ওই দুই শিশু সন্তানকে আর্থিক সহায়তা দেন বিএনপির প্রতিনিধি দল। তারা জানান, সোনিয়াকে আইনিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বিএনপি।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজবাড়ীর শহরের ৩ নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকা থেকে স্মৃতি নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জেলা মহিলা দলের সদস্য। তার স্বামী প্রবাসী।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, স্মৃতির জন্য যত রকম আইনি সহায়তা দরকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তা দিবেন। ইতোমধ্যে তিনি আইনজীবীদের সাথে কথাও বলেছেন। গ্রেফতারের খবর পাওয়ার পর থেকে তিনি এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক সংশ্লিষ্ট সবার সাথে যোগাযোগ করছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে এখানে আসার কথাও জানান।
তিনি বলেন, ‘সারা দুনিয়া জানে দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের একমাত্র লক্ষ্য। আপনারা শহীদুল আলমের কথা শুনেছেন, মাহমুদুর রহমানের কথা জানেন, মোস্তাকের কথা ভুলে যাননি। এরকম বহু সাংবাদিক ব্লগার আছেন যারা সামাজিক মাধ্যম ও পত্রপত্রিকায় লেখা বা তাদের মুক্ত চিন্তার কারণে সরকারের রোষানলে পড়েছে। ‘
তিনি সাংবাদিকদের এসবের প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা এখনো সাগর-রুনিকে ভুলে যাইনি। আমরা স্মৃতিকেও ভুলে যাব না। তার নয় বছরের কন্যা ও ১৩ বছরের শিশু সন্তান এবং তার পরিবারের পাশে বিএনপি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছেন।
সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, দুই শিশু সন্তানের কাছ থেকে তাদের মাকে গভীর রাতে ছিনিয়ে নিয়ে গ্রেফতার করা হৃদয় বিদারক।
নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র সোনিয়া আক্তার স্মৃতি নয়, এভাবে সরকারের দ্বারা নির্যাতিত প্রতিটি পরিবারের দায়িত্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিয়েছেন। আমাদের ক্ষমতার দরকার নেই, আমাদের দরকার জনগণের ভালোবাসা। এই ভালোবাসাই হচ্ছে বিএনপির শক্তির। এই শক্তি নিয়েই সামনে এগিয়ে যাব।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বলেন, একজন নারীকে রাতে গ্রেফতার করার এত কী প্রয়োজন ছিল? আইনে আছে, রাতে কোনো নারীকে গ্রেফতার করা যাবে না। তার বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সানিয়া আক্তার স্মৃতির ফেসবুকে পোস্টের কারণে প্রধানমন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাহলে যার মানহানি হয়েছে তিনি মামলা করবেন; সেখানে আরেকজন এসে তার পক্ষে মামলা করতে পারেন না। তৃতীয় কোনো ব্যক্তি মামলা করতে পারেন না। এটা আইনের কোনো পর্যায়ে পড়ে না বলেও উল্লেখ করেন।
এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সামসুল আরেফিন চৌধুরী সোনিয়া আক্তার স্মৃতির ফেসবুকে পোস্টের বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ৩১ আগস্ট সোনিয়া আক্তার স্মৃতি তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে ‘আপত্তিকর’ কথা লেখেন। অনেকে পোস্টটি দেখায় প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ণ ও মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।