গোপন কক্ষে ঢুকে ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি: সিইসি (ভিডিও)

অনলাইন ডেস্কঃ

গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে প্রকাশ্যে অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, ‘গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি। মূল অ্যাকশন হিসেবে আমরা কেন্দ্র বন্ধ করেছি। এখন চাকরিবিধি অনুযায়ী বা অন্য বিধি অনুযায়ী কী অ্যাকশন নেবো তা পরবর্তীতে দেখবো। আমরা টেলিফোনে এসপি, ডিসি, রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি, আমরা এখান থেকে সিসি ক্যামেরায় দেখতে পেয়েছি। তাই সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। কমিশন যদি মনে করে নির্বাচন সঠিকভাবে হচ্ছে না তাহলে কমিশন নির্বাচন বন্ধ করতে পারে। আমরা সেই আলোকে নিদ্ধান্ত নিচ্ছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যখন নেবো, তখন জানাবো।’

আজ বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে সিসিটিভি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

নির্বাচন পরিস্থিতি কেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল তা আমরা বলতে পারবো না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটাই। আপনারাও দেখতে পেয়েছেন যে গোপন কক্ষে হচ্ছে এবং সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। কেন হচ্ছে এমন তা চটজলদি বলতে পারবো না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকমতো কাজ করছে কিনা। তা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ইভিএমেরও কোনও ত্রুটি দেখতে পাচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘ওই যে মানবিক আচরণ, আরেকজন ঢুকে যাচ্ছে, দেখিয়ে দিচ্ছে। আবার অনেকেই দেখছি গেঞ্জি পড়ে, শাড়ি পড়ে যেখানে প্রতীক আছে দেখিয়ে যাচ্ছে। তারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। এটা সুশৃঙ্খল নির্বাচনের পরিপন্থী। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারাই আইন মানছেন না তাদেরই আমরা ডাকাত, দুর্বৃত্ত বলতে পারি। কারণ আইনের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। সবাই যদি আইন না মানি নির্বাচন কমিশন এখানে বসে সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারবে না।’

এর আগে সিইসি বলেন, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ব্যাপক অনিয়মের কারণে ১৪৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৪টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সিসিটিভির মাধ্যমে ভোটগ্রহণ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করছি। কোনও কেন্দ্রে অনিয়ম হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিচ্ছি।

উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। এর দুই দিন পর তার সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়।

গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপনির্বাচনে মোট পাঁচ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন—আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মাহমুদ হাসান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবার রহমান। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে বাকি চার প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাঘাটা উপজেলার বগার ভিটা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এই ঘোষণা দেন তারা।

সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩।

 

গোপন কক্ষে ঢুকে ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি: সিইসিদেশী টুয়েন্টিফোর
Comments (0)
Add Comment