অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রসহ জি-৭ জোটের দেশগুলো রাশিয়ার ‘ওয়ার মেশিন’, মস্কোর লাভজনক হীরা বাণিজ্য এবং ইউক্রেন আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত আরও কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আজ শুক্রবার (১৯ মে)। এর আগে ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭ এর নেতারা জাপানের হিরোশিমায় রাশিয়ার বাৎসরিক চার থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের হীরার বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক করেন। জি-৭ জোটের সদস্য দেশগুলো হলো জাপান, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
প্রায় ১৫ মাস আগে ইউক্রেনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আগ্রাসনের কারণে দেশটি বেশ কয়েকবার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। এই আগ্রাসন রাশিয়াকে মন্দার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে এবং ক্রেমলিনকে যুদ্ধের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
জি-৭ এখন বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলোকে আরও শক্ত করে, ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করে এবং আরও বেশি রাশিয়ান সংস্থা এবং তাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের শাস্তিমূলক বিধিনিষেধের আওতায় আনতে চাচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সপ্তাহ শেষে ভার্চুয়ালি জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে স্বাগতিক জাপানের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে তিনি শেষ মুহূর্তে ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেন।
আজ দিনের শুরুতে ওয়াশিংটন রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জি-৭ এর দেশগুলোর কাছ থেকে সমর্থন পেয়ে গেল। মার্কিন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশে থাকা আরও ৭০টি সংস্থাকে মার্কিন কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় তিন শতাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, জাহাজ ও বিমান সংস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, “জি-৭ এর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাগুলো রাশিয়াকে হুমকির মুখে ফেলবে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল বলেন, “রাশিয়ার হীরা চিরদিনের জন্য নয়। আমরা রাশিয়ার হীরা বাণিজ্যের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করব।”
ইইউর সদস্য দেশ বেলজিয়াম, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে রাশিয়ার হীরার বৃহত্তম পাইকারি বাজার রয়েছে।
জি-৭ এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তা নিয়ে অর্থনীতিবিদরা বিভক্ত। রাশিয়ার অর্থনীতি ২০২২ সালে দুই দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। এই প্রবণতা এই বছরের শুরুতে অব্যাহত ছিল। কিন্তু মস্কো দ্রুত খাপ খাইয়ে নিয়েছে। চীনের মতো মিত্রদের কাছে বাণিজ্যকে ছড়িয়ে দিয়েছে এবং কিউবা, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো দীর্ঘ নিষেধাঞ্জার কবলে পড়া দেশগুলো থেকে ছলচাতুরির কৌশল ধার করেছে বলে জানা গেছে।
জি-৭ নেতারা ভারত ও ব্রাজিলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানাতেও এই শীর্ষ সম্মেলনকে ব্যবহার করছে। কারণ এই দুটি আঞ্চলিক শক্তি প্রায়ই মস্কো বা চীনের সমালোচনা করতে অনিচ্ছুক থাকে।