আমদানি অনুমতির খবরে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতন

অনলাইন ডেস্ক:

পেঁয়াজের সরবরাহ কমের অজুহাতে অস্থির বাজার। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম কখনো বাড়ছে, আবার আমদানি অনুমতির খবরে কমছে। পেঁয়াজের বৃহৎ মোকাম হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ভোগ্য পণ্যের বাজারে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। রোববার (৪ জুন) সকালে যে পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০ টাকা বিক্রি হয়েছে সন্ধ্যায় তা নেমে আসে ৭০ টাকায়।

চাকতাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম গণমাধ্যমকে জানান, সকালে খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে ৯০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। কৃষি মন্ত্রণালয় পণ্যটি আমদানির অনুমতি দিয়েছে- এমন খবর প্রকাশের পরপরই দাম কমতে শুরু করেছে। এখন কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আমদানির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দিনাজপুরের হিলিতেও পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা। রোববার (৪ মার্চ) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পাইকারিতে ৮৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়। তবে সন্ধ্যা থেকে তা নেমে আসে ৭৫ টাকায়। পাইকারি বাজারে দাম কমায় খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।

হিলি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শাকিল খান বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না দেয়ায় ও দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে আসায় মোকামে রাত পোহালেই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। যার কারণে আমাদেরকে বাড়তি দামে কিনতে হয়, আবার বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছিল। দেশি পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের ও শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। যার কারণে আমরাও বাড়তি দামে পেঁয়াজ কেনা হলেও লোকসানের আশংকায় ইতোমধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমিয়ে বিক্রি করছি। এছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে ওই পেঁয়াজের দাম কম হবে।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার (৫ জুন) থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। রোববার (৪ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সীমিত আয়ের, শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রোববার (৪ জুন) ঢাকার আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি আমাদের জন্য উভয়সংকটের মতো। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলে দাম অনেক কমে যায়, কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়; পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। আর আমদানি না করলে দাম বেড়ে যায়, ভোক্তাদের কষ্ট হয়। সেজন্য, সবসময়ই আমরা চাষি, উৎপাদক, ভোক্তাসহ সবার স্বার্থ বিবেচনা করেই আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।

দেশীয় পেঁয়াজের ন্যায্য দাম নিশ্চিতে ও কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় গত ১৬ মার্চ থেকে দেশের সব বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। ঈদের পর থেকে বাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছে  যায়।

২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। এবছর ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। পেঁয়াজের সংগ্রহ থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে বিভিন্ন ধাপে অপচয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাদে গত বছর  নিট উৎপাদন হয়েছে ২৪.৫৩ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২৮ থেকে ৩০ লাখ মেট্রিক টন। ২০২১-২২ অর্থ বছরে পেঁয়াজ আমদানি হয় ৬.৬৫ লাখ মেট্রিক টন।

আমদানি অনুমতির খবরে পেঁয়াজের ব্যাপক দরপতনদেশী টুয়েন্টিফোর
Comments (0)
Add Comment