অনলাইন ডেস্ক:
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথম ২০ মাসে নিহত হয়েছেন ছয় হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। নরওয়েভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব অসলো স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৩ জুন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে চলছে সামরিক শাসন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধে নিয়োজিত বেশ কিছু গোষ্ঠী। আর দুই পক্ষের সংঘাতে এ সময় প্রাণ গেছে ছয় হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিকের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এই ২০ মাসে মিয়ানমারে ৬ হাজার ৩৩৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
রিপোর্টের দু’জন লেখকের একজন স্টেইন টননেসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের তথ্যে দেখা যাচ্ছে- সংঘাতে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা আগের প্রাপ্ত সংখ্যার চেয়ে বেশি এবং জান্তা সরকার স্পষ্টতই বেসামরিক নাগরিকদের প্রধান হত্যাকারী। তবে জান্তা-বিরোধী শক্তির হাতেও প্রচুর পরিমাণে রক্তের দাগ রয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ২০ মাসে মিয়ানমারে ‘রাজনৈতিক কারণে’ আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৬১৪ জন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাসহ অন্যদের প্রচারিত পরিসংখ্যানের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক বেশি।
প্রতিবেদন অনুসারে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর হওয়া এসব প্রাণহানির প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ৩ হাজার ৩ জনের মৃত্যুর জন্য সরকারকে – সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং মিলিশিয়াদের – দায়ী করা হয়েছে। অন্যদিকে ২ হাজার ১৫২ জনের মৃত্যুর জন্য সশস্ত্র বিরোধী দলগুলোকে দায়ী করেছে পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব অসলো
এছাড়া ১২ জনের মৃত্যুর জন্য জান্তা বা বিরোধীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন অন্য বেসামরিক নাগরিকদের দায়ী করা হয়েছে এবং ১১৭০ জনের মৃত্যুর জন্য অজ্ঞাত অপরাধীদের দায়ী করা হয়েছে।
এএফপি বলছে, ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অং সান সু চির দলের জয়লাভকৃত নির্বাচন বাতিল করে এবং তার সরকারকে উৎখাত করে।
আর এরপর থেকে জান্তা সরকার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির বিরোধীদের ওপর ব্যাপকভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষক গ্রুপের মতে, ক্ষমতা দখল করার পর থেকে ২৩ হাজারেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করেছে জান্তা।