অনলাইন ডেস্ক:
কালো কুচকুচে কালো গায়ের রঙ, উচ্চতা ৬ ফুট আর লম্বায় ১০ ফুট। ৫ বছর ধরে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতির খাবার খাইয়ে লালন পালন করা হয়েছে তাকে। শখ করে নাম রাখা হয়েছে ‘পাবনার পাগলা রাজা’। এবারের কুরবানি ঈদের হাট কাঁপাচ্ছে সে।
খামারি রেজাউল করিমের দাবি অনুযায়ী, ঈদকে সামনে রেখে ৪০ মণ ওজনের এই ষাঁড় গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১৭ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে গরুটি দেখতে খামারি রেজাউল করিমের বাড়িতে যাচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ যাচ্ছেন। আর কিনতে দরদাম করছেন পাইকাররা।
খামারি রেজাউল করিম পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মৃত রহমত আলীর ছেলে। ২০১১ সালে তিনি গরুর খামার শুরু করেন। তিন বছর আগে একবার ৩০ মণ ওজনের একটি বড় গরু তিনি করেছিলেন।
আলাপকালে জানা যায়, শখের বসে প্রায় ৫ বছর আগে ঈশ্বরদীর অরনকোলা হাট থেকে ৫৭ হাজার ৮০০ টাকায় হলস্টেইন ফিজিয়ান জাতের একটি বাছুর কিনে লালন-পালন শুরু করেন তিনি। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রেখে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে লালন-পালন করা ওই বাছুর এক বছর যেতে না যেতেই চোখে পড়ার মতো একটি ষাঁড়ে পরিণত হয়।
শান্তশিষ্ট দেখে শখ করে পাগলা পাগলা বলে ডাকতে থাকেন খামারি রেজাউলসহ বাড়ির সবাই। এক পর্যায়ে গরুটির নাম রাখেন ‘পাবনার পাগলা রাজা’।
খামারি রেজাউল করিম জানান, ভুট্টা, জব, কাঁচা ঘাস, কালাইয়ের ভুষি, গমের ভুষি এবং ধানের খড় খাইয়ের বড় করেন মোটাতাজা করা হয়েছে পাবনার পাগলা রাজাকে। কোনো কেমিকেল বা মেডিসিন ব্যবহার করা হয়নি।
খামারি রেজাউল করিমের দাবি, বর্তমানে পাবনার পাগলা রাজার ওজন ৪০ মণ। তিনি দাম হাঁকছেন ১৭ লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ব্যাপারী ও পাইকাররা আসছেন গরুটি কিনতে। উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করার আশা খামারি রেজাউলের।
রেজাউল করিমের স্ত্রী আসমা খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লালন পালন করতে গিয়ে পাবনার পাগলা রাজার মায়ায় পড়ে গেছি আমরা। তাকে ছাড়তে ইচ্ছে করছে না। মন খারাপ লাগছে। কিন্তু কি করবো। একদিন তো বিক্রি করতে হবে। ধরে রাখার তো উপায় নাই।
এদিকে, এত বিশাল ষাঁড় গরু দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। নানা জনে দিচ্ছেন নানা মত। খোঁজ খবর নিচ্ছেন ব্যাপারীরাও।
খলিলুর রহমান ও আব্দুল করিম নামে দুই দর্শনার্থী বলেন, রেজাউলের খামারে বিশাল ষাঁড় গরু আছে শুনে দেখতে আসছেন তারা। এর আগে কখনও এত বড় গরু তারা দেখেননি। তাদের ধারণা গরুটির ওজন হবে ৩২ থেকে ৩৫ মণ। গরুটি দেখে তাদের খুব ভাল লেগেছে বলে জানান তারা।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আল মামুন হোসেন মণ্ডল বলেন, জেলায় অনেক খামারি কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করেছেন। এবার খামারিরা বেশ লাভবান হবেন। খামারি রেজাউল করিমও তার বড় গরুটি লাভজনক দামে বিক্রি করতে পারবেন বলেন আশা করেন তিনি।
জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর পাবনা জেলায় কুরবানির পশুর চাহিদা ৩ লাখ। আর জেলা পশু প্রস্তুত রয়েছে ৬ লাখের বেশি।