অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা ট্রেনের অত্যাধুনিক পাঁচটি ব্রডগেজ ইঞ্জিন কঠোর নিরাপত্তায় রাখা হয়েছিল রেলওয়ের চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই)। রেলের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ছাড়াও এসব ইঞ্জিনের পাহারায় ছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মীরা। অথচ আমদানির মাত্র ১৩ দিনের মাথায় সিজিপিওয়াই থেকে চুরি হয়ে গেছে ইঞ্জিনগুলোর কেবলসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতি।
বিষয়টি স্বীকার করে সিজিপিওয়াইর ট্রেন এক্সামিনার আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, বিভিন্ন চালানে দেশে ৩০টি ইঞ্জিন এসেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ পাঁচটি ইঞ্জিনের চালান এসেছে গত ২৭ জুন। এ চালানের ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশই চুরি হয়েছে। যেগুলো চুরি হয়েছে, সেগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে না আসা পর্যন্ত ইঞ্জিনগুলো চালানো যাবে বলে মনে হয় না।
এদিকে এত নিরাপত্তার মধ্যেও সিজিপিওয়াই থেকে কীভাবে চুরির ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে রেলে চলছে তোলপাড়। চুরির দায় এড়াতে সরকারি-বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করছেন। চাঞ্চল্যকর এ চুরির ঘটনা চেপে যাওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ইঞ্জিন সংকট কাটাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪০টি ব্রডগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক (ডিই) লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কিনেছে রেলওয়ে। ১ হাজার ১২৩ কোটি ৫ লাখ টাকায় এসব লোকোমোটিভ সরবরাহ করছে মার্কিন কোম্পানি প্রোগ্রেসিভ রেল ইউএসএ। ইঞ্জিনগুলো কেনা হয় রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের জন্য। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে গত মাসের শেষ দিক থেকে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ইঞ্জিনগুলো আসতে শুরু করে। এরই মধ্যে ৩০টি ইঞ্জিন চলে এসেছে। অবশিষ্ট ইঞ্জিনগুলো শিগগির চলে আসার কথা।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড়িয়ে আনার পর ইঞ্জিনগুলো প্রথমে সিজিপিওয়াইয়ে রাখা হয়। সেখান থেকে রেলের ট্রলিতে করে সেগুলো রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল রাজশাহীতে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। (১০ জুলাই) সোমবারও তিনটি ইঞ্জিন পাঠানো হয়েছে। চুরি হওয়া কেবল ও যন্ত্রাংশ ইঞ্জিনের ভেতরে প্যাকেটজাত অবস্থায় ছিল।
আরএনবি চট্টগ্রাম সদরের কমান্ডেন্ট রেজোয়ানুর রহমান বলেন, ‘সিজিপিওয়াইয়ে আরএনবি ছাড়াও ইঞ্জিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিয়োজিত নিরাপত্তা কর্মীরা ছিলেন। তবু কীভাবে এমন চুরির ঘটনা ঘটল, তা বোধগম্য হচ্ছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ জন্য তদন্ত কমিটি হবে।’