প্রথম ও দ্বিতীয় স্প্যানের পর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর তৃতীয় স্প্যান বসানো হল। রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। ১৫০ মিটারের তিনটি স্প্যান যুক্ত হওয়ার ফলে পদ্মা সেতুর ৪৫০ মিটার দৃশ্যমান হল।
প্রকৌশলী ও শ্রমিকেরা ক্রেনের সাহায্যে সেভেন-সি নামে স্প্যানটি ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হয়েছে বলে জানান পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী (মূল সেতু) হুমায়ুন কবির।
তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন ওয়েল্ডিংয়ের সাহায্যে দুটি স্প্যানের জোড়া লাগানোর কাজ চলছে। ওয়েল্ডিংয়ের কাজ শেষ হতে আরও কিছু সময় লাগবে। এর পর চতুর্থ স্প্যান বসানোর জন্য ৪১ নম্বর পিয়ারটিও প্রস্তুত হচ্ছে।
এর আগে তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের এবং ১৫০ মিটার লম্বা স্প্যানটি নিয়ে ভারী একটি ভাসমান ক্রেন গত শুক্রবার মাওয়া থেকে জাজিরার নাওডোবার দিকে রওনা দেয়। শনিবার দুপুরে ওই স্প্যান জাজিরা প্রান্তে এসে পৌঁছায়। রোববার ভোর থেকে স্প্যানটি ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটিতে বসানোর কাজ শুরু করা হয়। সকাল সাড়ে নয়টায় ভারী ওজনের ভাসমান ক্রেনে ঝুলিয়ে রাখা স্প্যানটি বসানোর পর ওয়েল্ডিংয়ের কাজ শুরু হয়। ৩৮ ও ৩৯ নম্বর খুঁটিতে থাকা স্প্যানের সঙ্গে ওয়েল্ডিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হবে এই স্প্যানটি।
স্প্যান বসানোর কাজে নিযুক্ত প্রকৌশলী ও শ্রমিকেরা রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্প্যান বসানোর কার্যক্রম চালান।
ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকেই স্প্যানটি ইয়ার্ড থেকে বের করে রাখা হয় ক্রেনে তুলতে। তবে সব প্রস্তুতি শেষ করতে আরো কয়েকদিন সময়ের প্রয়োজন ছিলো, তাই মাওয়া থেকে এটি নির্ধারিত পিলারের কাছে নিয়ে যাওয়া শুরু হয় শুক্রবার। ৩২শ টন ওজনের স্প্যানটি নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩৬শ টন ওজন বহনে সক্ষম ভাসমান ক্রেন।
এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান এবং চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় স্প্যানটি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিয়ারে বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ৩০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছিল জাজিরা প্রান্তে। ৩৭, ৩৮, ৩৯ ও ৪০ নম্বর খুঁটির অবস্থান হচ্ছে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার পদ্মা নদীর দক্ষিণ তীরসংলগ্ন এলাকায়। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার এবং ওজন ৩ হাজার ১৪০ টন।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতলবিশিষ্ট কংক্রিটের এই সেতুর ৪২টি পিয়ারের ওপর এমন ৪১টি স্প্যান বসানো হবে।
স্প্যান বসানোর দৃশ্য দেখতে পদ্মা নদীর তীর জাজিরার নাওডোবায় শত শত মানুষ ভিড় করে। তাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ করা গেছে।