হায়দ্রাবাদ: ভারতের তেলেগু ছবির এক অভিনেত্রী প্রকাশ্যে কাপড় খুলে এক নগ্ন প্রতিবাদে অংশ নিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন।
বলা হচ্ছে চলচ্চিত্র শিল্পে যৌন হয়রানি এবং তেলেগু ছবিতে স্থানীয় শিল্পীদের যথেষ্ট সুযোগ না দেয়ার প্রতিবাদ জানাতে অভিনেত্রী শ্রী রেড্ডি এই কাজ করেন। খবর বিবিসি
হায়দ্রাবাদে তেলেগু ফিল্ম চেম্বার অব কমার্সে এই অভিনব প্রতিবাদের পর অভিনেত্রী শ্রী রেড্ডিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অশ্লীল আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
টুইটারে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও ক্লিপে দেখা যাচ্ছে, পার্ক করে রাখা কিছু গাড়ির সামনের একটি খোলা চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে শ্রী রেড্ডি কাপড় খুলতে শুরু করেছেন। এরপর দুহাতে বুক ঢেকে তাকে সেখানে বসে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শ্রী রেড্ডির মূল অভিযোগটি হচ্ছে, তেলেগু চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজকরা স্থানীয় শিল্পীদের সুযোগ না দিয়ে অন্য রাজ্যের শিল্পীদের প্রাধান্য দিচ্ছেন।
তাকে কেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্য করা হচ্ছে না সেটি নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তবে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, শ্রী রেড্ডি চলচ্চিত্র শিল্পে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই অভিনব কাজটি করেছেন। অনেকদিন ধরেই তিনি নাকি এ নিয়ে সরব ছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এই ‘নগ্ন প্রতিবাদ’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। তেলেগু ছবিতে কাজ দেয়ার জন্য চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজকরা নাকি তার কাছে নগ্ন ছবি দাবি করতেন।
অনেকে শ্রী রেড্ডির এই প্রতিবাদকে ভারতের ‘হার্ভি ওয়েইনস্টেইন মোমেন্ট’ বলে তুলনা করছেন।
উল্লেখ্য হলিউডের নামকরা প্রযোজক হার্ভি ওয়েইনস্টেইনের বিরুদ্ধে গত বছর বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলার পর এ নিয়ে সেখানকার চলচ্চিত্র শিল্পে বিরাট প্রতিবাদ শুরু হয়।
শ্রী রেড্ডির বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ২৯৪ ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে।
‘নারী হিসেবে মেনে নেয়া পীড়াদায়ক’
পূর্ণিমা’র সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন মৌসুমী। এর আগে তার স্বামী ওমর সানী এ বিষয়ে মন্তব্য করেন। সেলিব্রিটি শো’টির একটি পর্বে পূর্ণিমার সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন মিশা সওদাগর। সেখানে সিনেমার ‘ধর্ষণ’ নিয়ে প্রশ্ন করেন ‘সুভা’ নায়িকা। আর তা নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।
‘কার সঙ্গে ধর্ষণ সিনে অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?’— এমন প্রশ্নে মৌসুমী ও পূর্ণিমার নাম বলেন মিশা। শুধু তাই নয় ‘বন্ধু’ দাবি করে মৌসুমীর সঙ্গে অভিনয়ের নানা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন খলনায়ক।
এই নিয়ে শনিবার রাতে ওমর সানীর ফেসবুক পাতায় মৌসুমী লেখেন, প্রিয় দর্শক, আজ একজন অভিনেত্রী হয়ে নয়, একজন নারী হিসেবে আপনাদের কিছু কথা বলতে চাই। আপনারা জানেন কয়েকদিন আগে একটি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠানে ‘ধর্ষণ’ নিয়ে ঠাট্টা করা হয়েছিল। বিষয়টি হাসি তামাশা করার নয়। সঞ্চালক যেভাবে প্রশ্ন করলেন অতিথিকে আর তিনি যেভাবে উত্তর দিলেন তাতে মনে হলো আমরা যেন বোকার স্বর্গে বাস করছি।
আরো লেখেন, ‘পরে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হতে শুরু করল। পুরো বিষয়টি একজন নারী হিসেবে মেনে নেয়া ছিল পীড়াদায়ক। আমরা চলচ্চিত্রে নানারকম অভিনয় করে দর্শককে বার্তা দিয়ে থাকি। যাতে ভালোমন্দ দুটোই থাকে, শেষে জয় হয় ভালোর; পরাজয় ঘটে মন্দের।
সেসব ইতিবাচক বার্তা তুলে না ধরে সমাজের নেতিবাচক দিকগুলো টক-শোতে এনে শুধু একজন বা দুজনকে নয় পুরো নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে। শুধু আমার নয়, অন্য অনেকের ভক্ত, দর্শক বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি, সকলেই যার যার অবস্থান হতে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এমন বক্তব্যের নিন্দা জানাচ্ছি। আমি প্রত্যাশা করব এ অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলে ভবিষ্যতের কোনো একটি পর্বে এ ধরনের আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেবেন।’
অবশ্য সমালোচনার সূত্র ধরে আগেই পূর্ণিমা ও অনুষ্ঠানটির প্রযোজক দুঃখ প্রকাশ করেছেন।