তাই রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে যেসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে তা স্থগিত করতে সরকার ও কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।
এরই মধ্যে রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার ও তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে এলএফএল। তারা বলেছে, এই বাংলাদেশি কি অপরাধে অপরাধী তার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখা এখনও কর্তৃপক্ষ দিতে পারে নি। রায়হান কবিরের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করাকে বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেছে এলএফএল। তারা বলেছে, তার বিরুদ্ধে গৃহীত এই ব্যবস্থা ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩ এর ধারা ৯(১)সি-এর লঙ্ঘন। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোন পারমিট হোল্ডারের উপস্থিতি বা মালয়েশিয়ায় প্রবেশে যদি জনশৃংখলা, জননিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য অথবা দেশে নৈতিকতার জন্য অনিষ্টকর হয় তাহলে ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক তার প্রবেশ বা পাস বা পারমিট আটকে দিতে পারেন।
জায়েদ মালেক বলেছেন, এক্ষেত্রে এটা সুস্পষ্ট যে, শুধু আল জাজিরায় শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ করার কারণে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধমুলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। এলএফএল বলেছে, করোনা মহামারির সময়ে চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকায় অবৈধ অভিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর কর্তৃপক্ষ যে দমনপীড়ন চালিয়েছে রায়হান শুধু তাতে তার হতাশা প্রকাশ করেছে। এলএফএল বলেছে, স্থানীয় অধিকারকর্মীরা ও বেসরকারি সংগঠনগুলো যেসব অভিযোগ করে আসছে, রায়হান কবিরের অভিযোগ তো তেমনই। এ কারণে গত শুক্রবার তাকে সেটাপক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে। তারা বলেছে, তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং মালয়েশিয়ায় প্রবেশের ক্ষেত্রে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
উল্লেখ্য, আল জাজিরার ‘১০১ ইস্ট’ টিম ২৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করে করোনাকালে মালয়েশিয়ায় কর্মরত শ্রমিকদের ওপর। এতে পুত্রজয়ায় বন্দিশিবিরে অবৈধ শ্রমিকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে তার সমালোচনা করেছিলেন রায়হান। এতে তিনি অবৈধ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ বর্ণবাদী আচরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, মালয়েশিয়ায় অবৈধ শ্রমিক হওয়া কোনো ক্রাইম নয়। এর প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে। বহু মালয়েশিয়ান সামাজিক মিডিয়ায় তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সময়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ‘১০১ ইস্ট’ টিমের সদস্যদের তলব করা হয় বুকিত আমানে। তাদেরকে পুলিশ এবং এটর্নি জেনারেলের চেম্বারস জিজ্ঞাসাবাদ করে। বলা হয়, তাতে রাষ্ট্রদ্রোহের উপাদান পাওয়া গেছে।