মানবাধিকার আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনায় বক্তাগণ ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’
৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে BHRF আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনা সভায় বক্তাগণ বলেন ‘‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’ । এটি এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য । এজন্যে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য ও সহিংসতা অপনোদন করতে এগিয়ে আস্তে হবে বিশ্বকে ।
অদ্য দুপুর ১২টায় বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসানের সভাপতিত্বে আইনজীবি ভবনে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন-BHRF চট্টগ্রাম শাখার আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তাগণ আরো বলেন- সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিনটি উদ্যাপিত হয় । নারী’র প্রথম অক্ষরটিই ‘না’। তাই হয়তো একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসেও নারীকে শুনতে হয় ‘না’। মানবচক্রের যেই মাধ্যমে আমাদের এই পৃথিবীতে আসা, তার একটি অপার মাধ্যম এই নারী। এই নারী কখনো আপনার মা, কখনো আপনার বোন আবার কখনো স্ত্রী। ধর্মেও আছে নারীর সম্মানের স্থান। হাজার সম্পর্কের মাঝে তাদের সঙ্গে আপনার আমার সম্পর্ক অন্যতম।নিজেকে অন্যের সুখে হাসতে হাসতে বিলিয়ে দিতে পিছপা হন না এই নারী। তাই হয়তো একাই ভালোবাসে সমস্যা ও সমাধানের হালটি কাঁধে তুলে নিতে। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পার করেই চলে এই নারীর জীবন। যার জন্য উৎসর্গ করা যায় বছরের প্রত্যেকটি দিন। তাকে উদ্দেশ্য করে যা-ই করা হয়, তা-ই হয়তো তার করা কাজের কাছে কম। তাই তার উদ্দেশ্য করে আর তাকে সম্মান জানাতে বিশ্বে একটি দিন পালিত হয় নারী দিবস হিসেবে।
বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাঁদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে মহিলাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবেই পালন করা হয়।প্রথম ১৯০৯ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ওই বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আমেরিকায় নারী দিবস (National Woman’s Day) উদযাপন করা হয়েছিল।
সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা নিউ ইয়র্কে ১৯০৮ সালে বস্ত্রশ্রমিকরা তাঁদের কাজের সম্মান আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ আর সমমানের বেতনের দাবিতে চলে হরতাল।১৯১০ সালে কোপেনহেগেনের উদ্যোগের পর, ১৯ মার্চ অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইৎজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক নারী দিবস চিহ্নিত হয়েছিল। নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কাজের বৈষম্যের অবসানের জন্য প্রতিবাদ করেন লক্ষ মানুষ। একই সঙ্গে রাশিয়ান মহিলারাও প্রথমবার ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘রুটি ও শান্তি’র দাবিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরোধিতা করেন। ইউরোপের নারীরা ৮ মার্চ শান্তি বিষয়ক কার্যক্রমকে সমর্থন করে বিশাল মিছিলে নামেন। ১৯১৩-১৯১৪ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিবাদ জানানোর একটি প্রক্রিয়া হয়ে ওঠে।আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চ দিনটিকে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ সদস্য রাষ্ট্রদের নারী অধিকার ও বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য জাতিসংঘ দিবস হিসাবে ৮ মার্চকে ঘোষণা করার আহ্বান জানায়।
মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইট ফাউন্ডেশন বি.এইচ.আর.এফ চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের উদ্দ্যোগে ৮ই মার্চ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের পরিচালক (অর্গানাইজিং) এডভোকেট এ.এম জিয়া হাবীব আহ্সান, আলোচনায় অংশ নেন প্রবীণ মানবাধিকার আইনজীবী সুনীল কুমার সরকার, এডভোকেট জান্নাতুল নাঈম (রুমানা)।
এডভোকেট এ.এইচ. এম. জসীম উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন, এডভোকেট প্রদীপ আইচ দীপু, এডভোকেট দেওয়ান ফিরোজ আহমদ, এডভোকেট সাইফুদ্দিন খালেদ, এডভোকেট মোঃ হাসান আলী, এডভোকেট মোহাম্মদ বদরুল হাসান মানবাধিকারকর্মী কে. এম শান্তনু চৌধুরী, জিয়া উদ্দীন আরমান, মোঃ রিদুয়ান করিম (নাভিল), সৈয়দ নাদিমুল আহসান, টুম্পা এইচ।